ঢাকা বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্র। শিল্পায়ন, যানজট এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে এ শহরের শব্দদূষণ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একজন মানুষের সহনশীল শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেল। অথচ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় শব্দের মাত্রা ৮৫ থেকে ১০৫ ডেসিবেলের মধ্যে ওঠানামা করে, যা মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
ঢাকার শব্দদূষণের প্রধান কারণ:
১. যানবাহনের হর্ন: ঢাকা শহরে শব্দদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে যানবাহনের অবিরাম হর্ন বাজানো। ব্যস্ত সড়কগুলোতে গাড়ির হর্ন বাজানো যেন একটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। যানজটপূর্ণ শহর ঢাকায় এই শব্দদূষণ শুধু পরিবেশের জন্য নয়, জনস্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে।
যানজট: যানজট এড়াতে চালকরা বারবার হর্ন বাজিয়ে রাস্তায় অগ্রাধিকার পাওয়ার চেষ্টা করেন।
অবৈধ যানবাহন: লেগুনা, সিএনজি এবং রিকশার মতো ছোট যানবাহনগুলো প্রতিযোগিতার কারণে অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজায়।
সচেতনতার অভাব: চালকরা প্রায়শই জানেন না যে অতিরিক্ত হর্ন বাজানো শব্দদূষণ সৃষ্টি করে।
লাউড হর্ন: যানবাহনে উচ্চশব্দের হর্নের ব্যবহার, যা অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।
২. নির্মাণকাজ: ঢাকা শহরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নির্মাণকাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে এই নির্মাণকাজই শহরের শব্দদূষণের অন্যতম প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে। ঢাকায় চলমান অসংখ্য নির্মাণ প্রকল্পের কারণে দিন-রাত শব্দদূষণ অব্যাহত থাকে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
ভারি যন্ত্রপাতি: কংক্রিট কাটার মেশিন, বুলডোজার, ড্রিল মেশিন, এবং ক্রেনের তীব্র শব্দ।
নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন: ট্রাক ও অন্যান্য ভারী যানবাহন থেকে সৃষ্ট উচ্চশব্দ।
কাঠামো ভাঙা: পুরাতন ভবন ভাঙার সময় হাইড্রোলিক ব্রেকারের শব্দ।
অপরিকল্পিত কাজের সময়সূচি: অনেক নির্মাণকাজ রাতে করা হয়, যা আশেপাশের বাসিন্দাদের জন্য বিশেষভাবে বিরক্তিকর।
পরিবেশ অধিদপ্তরের গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকার নির্মাণকাজ এলাকাগুলোতে শব্দের গড় মাত্রা ৯৫ থেকে ১২০ ডেসিবেল, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত নিরাপদ সীমা (৬০ ডেসিবেল) থেকে অনেক বেশি। নির্মাণকাজের শব্দ শহরের শব্দদূষণের ৪৫% অবদান রাখে। মগবাজার, ধানমন্ডি, এবং উত্তরা এলাকার নির্মাণস্থলগুলোতে শব্দদূষণ সবচেয়ে বেশি।
৩. শিল্পকারখানা: ঢাকা শহরের বর্ধিত জনসংখ্যা এবং দ্রুত নগরায়ণের সঙ্গে সঙ্গে শিল্প কারখানার সংখ্যাও বেড়েছে। এই কারখানাগুলো শহরের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও শব্দদূষণের একটি বড় উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারী যন্ত্রপাতির ব্যবহারের কারণে কারখানাগুলোর আশপাশের এলাকায় শব্দের মাত্রা ভয়াবহভাবে বেড়ে চলেছে, যা পরিবেশ এবং মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
ঢাকার বিভিন্ন কারখানা থেকে শব্দদূষণের প্রধান কারণগুলো হলো:
ভারি যন্ত্রপাতি: মেশিন, জেনারেটর, এবং টারবাইন থেকে নির্গত উচ্চ শব্দ।
২৪/৭ কার্যক্রম: অনেক কারখানা দিন-রাত চালু থাকে, ফলে ধ্রুব শব্দ উৎপন্ন হয়।
পরিবহন ব্যবস্থা: কারখানার পণ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত ট্রাক ও লরির শব্দ।
অপরিকল্পিত স্থাপনা: আবাসিক এলাকার মধ্যে কারখানার অবস্থান, যেখানে শব্দদূষণ সরাসরি মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে: টঙ্গী, গুলশান শিল্প এলাকা, এবং মিরপুরের ছোট কারখানা অঞ্চল শব্দদূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। শহরের মোট শব্দদূষণের ৩০% উৎস কারখানা ও শিল্প কার্যক্রম।
৪. মাইক ও স্পিকার: ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরে মাইক এবং স্পিকারের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার শব্দদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ। ধর্মীয় অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান, এবং বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য উচ্চ শব্দে মাইক ও স্পিকার ব্যবহৃত হয়। এই অনিয়ন্ত্রিত শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্য, মানসিক প্রশান্তি, এবং পরিবেশের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।
ঢাকায় মাইক এবং স্পিকার থেকে শব্দদূষণের প্রধান কারণগুলো হলো:
অতিরিক্ত শব্দমাত্রা: অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ভলিউমে মাইক ও স্পিকার ব্যবহার করা।
ধর্মীয় অনুষ্ঠান: আজানের জন্য মাইকের ব্যবহার, যা অনেক সময় অনুমোদিত সীমা অতিক্রম করে।
রাজনৈতিক সমাবেশ: বড় সমাবেশ ও মিছিলের সময় উচ্চশব্দের মাইকের ব্যবহার।
সামাজিক অনুষ্ঠান: বিয়ে, জন্মদিন, এবং বিভিন্ন উৎসবে স্পিকারের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার।
বিজ্ঞাপন প্রচার: পণ্য প্রচারের জন্য গাড়ি বা স্থানে স্থাপিত মাইকের ব্যবহার।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী: গুলশান, মতিঝিল, এবং পুরান ঢাকা এলাকায় সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের কারণে শব্দদূষণ বেশি।
শহরের মোট শব্দদূষণের প্রায় ২৫% উৎস মাইক ও স্পিকার।
জনস্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব
ঢাকা শহরে শব্দদূষণ একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা। যানবাহনের হর্ন, নির্মাণকাজ, কারখানার শব্দ, মাইক ও স্পিকারের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার—সবকিছু মিলে শহরজুড়ে ভয়াবহ শব্দদূষণ তৈরি করছে। এ শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে, একটি নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য পরিবেশে শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেল অতিক্রম করা উচিত নয়, কিন্তু ঢাকায় শব্দদূষণের গড় মাত্রা নিয়মিতভাবে এই সীমা অতিক্রম করে।
১. শ্রবণশক্তি হ্রাস: উচ্চ শব্দে দীর্ঘমেয়াদি এক্সপোজারের ফলে মানুষের শ্রবণশক্তি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঢাকার ৩৫% ট্রাফিক পুলিশের শ্রবণশক্তি হ্রাস পেয়েছে। নির্মাণকর্মী ও কারখানার শ্রমিকরা এই ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি।
২. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: ধ্রুব শব্দদূষণ মানুষের মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ বৃদ্ধি পায়। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, যা মানুষের শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতাকে প্রভাবিত করে। এক গবেষণায় জানা গেছে, ঢাকার ৬০% বাসিন্দা শব্দদূষণের কারণে অনিদ্রার সমস্যায় ভুগছেন।
৩. হৃদরোগ: শব্দদূষণ উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। WHO-এর মতে, দীর্ঘমেয়াদি শব্দদূষণ হৃদস্পন্দন এবং কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) বাড়িয়ে দেয়। ঢাকায় শব্দদূষণের কারণে হৃদরোগের ঘটনা বেড়েছে ২০%।
৪. শিশুদের উপর প্রভাব: উচ্চ শব্দ শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে এবং শেখার ক্ষমতা কমায়। স্কুল এবং আবাসিক এলাকায় মাইকের ব্যবহার শিশুর পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শব্দদূষণের কারণে ঢাকার শিশুদের মধ্যে মানসিক চাপ এবং আচরণগত সমস্যার হার বেড়েছে।
৫. বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষতি: বয়স্ক এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের হৃদযন্ত্র এবং স্নায়ুতন্ত্র শব্দদূষণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উচ্চ শব্দ তাদের জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দেয় এবং রোগের প্রকোপ বাড়ায়।
পরিবেশের উপর অদৃশ্য ধ্বংসযজ্ঞ
ঢাকা শহরের দ্রুত নগরায়ন, শিল্পোৎপাদন, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, এবং সামাজিক-রাজনৈতিক কার্যক্রমের কারণে শব্দদূষণ এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। শব্দদূষণ শুধু মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, এটি পরিবেশের উপরেও ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এটি শহরের বাস্তুসংস্থান, বন্যপ্রাণী, এবং সামগ্রিক প্রাকৃতিক ভারসাম্যকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করছে।
১. বন্যপ্রাণীর উপর প্রভাব: উচ্চ শব্দ বন্যপ্রাণীর জীবনযাত্রা ও প্রজনন প্রক্রিয়ায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটায়। পাখিরা শব্দদূষণের কারণে বাসা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। অনেক প্রাণী তাদের খাদ্য সংগ্রহ এবং প্রজনন ক্ষমতা হারায়। শহরতলির কাছাকাছি বসবাসকারী বন্যপ্রাণীরা উচ্চ শব্দের কারণে মারা যায় বা এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
২. গাছপালার উপর প্রভাব: যদিও গাছ সরাসরি শব্দ অনুভব করে না, তবুও শব্দদূষণ তাদের বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। শব্দের কারণে গাছের প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ শব্দময় এলাকায় গাছের বায়ু পরিশোধন ক্ষমতা ২০% কমে যায়।
৩. জলজ পরিবেশের উপর প্রভাব: শব্দদূষণ ঢাকার নদী এবং জলাশয়েও প্রভাব ফেলে। যান্ত্রিক নৌকার শব্দ জলজ প্রাণীদের বাস্তুসংস্থান ধ্বংস করে। মাছের প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি হয় এবং তারা ভিন্ন পরিবেশে চলে যায়।
৪. পরিবেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্যের ক্ষতি: শব্দদূষণ প্রাকৃতিক শব্দের ভারসাম্যকে নষ্ট করে। শহরে কৃত্রিম শব্দ এত বেশি যে পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর প্রাকৃতিক ডাক শোনা যায় না। এই ভারসাম্যহীনতা খাদ্যশৃঙ্খলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।
সমাধানের উপায়
ঢাকা শহরের দ্রুত নগরায়ন, বর্ধিত যানবাহন, নির্মাণকাজ, এবং অন্যান্য শিল্পকর্মের কারণে শব্দদূষণ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। তবে, যদি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে ঢাকায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
১. শব্দনিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ
ঢাকায় শব্দদূষণ কমানোর জন্য সঠিক আইন এবং তার কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন। বর্তমানে, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কিছু আইন রয়েছে, তবে সেগুলির যথাযথ প্রয়োগে ঘাটতি আছে। শহরের প্রধান সড়কগুলিতে ট্রাক, বাস, এবং অন্যান্য যানবাহনে হর্নের শব্দ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। ট্রাফিক আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ে এবং নির্দিষ্ট এলাকায় হর্ন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির শব্দ নিয়ন্ত্রণে নির্দিষ্ট নিয়ম করা উচিত। বিশেষত, রাতের বেলা নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা উচিত যাতে বাসিন্দারা শান্তিতে ঘুমাতে পারেন।
২. পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার
বর্তমানে বিভিন্ন প্রযুক্তি রয়েছে যা শব্দদূষণ কমাতে সাহায্য করতে পারে। শব্দনিরোধক প্রযুক্তি, যেমন সাইলেন্সার, শব্দ শোষণকারী যন্ত্রপাতি, এবং কম শব্দ উৎপন্ন করার জন্য উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যেতে পারে। যানবাহনগুলোর জন্য নির্বাচিত সাইলেন্সার এবং কম শব্দ উৎপন্নকারী ইঞ্জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত। শিল্প এলাকায় শব্দ কমানোর জন্য শব্দ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রপাতি ব্যবহারের প্রয়োজন।
৩. সবুজায়ন বৃদ্ধি
গাছপালা প্রাকৃতিকভাবে শব্দ শোষণ করতে সক্ষম, এবং এটি শহরের পরিবেশকে আরও শান্ত ও স্বাস্থ্যকর করে তোলে। শহরের প্রধান সড়ক এবং আবাসিক এলাকায় গাছপালা রোপণ করা উচিত। বিশেষত, সড়কগুলিতে গাছের সারি রোপণ করলে তা শব্দ শোষণ করতে সাহায্য করবে। ঢাকার বিভিন্ন পার্ক ও সবুজ এলাকার সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
৪. শব্দদূষণ মনিটরিং সিস্টেম
ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিতভাবে শব্দের মাত্রা পরিমাপ করা প্রয়োজন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এবং শিল্পাঞ্চলে সিসিটিভি এবং শব্দ মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করা উচিত, যা শব্দের মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ করবে এবং অতি শব্দ সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঢাকায় একটি “শব্দ মানচিত্র” তৈরি করা যেতে পারে, যেখানে শহরের বিভিন্ন এলাকার শব্দদূষণের তথ্য থাকবে। এই মানচিত্রের ভিত্তিতে কীভাবে শব্দদূষণ কমানো যায়, তার পরিকল্পনা করা যেতে পারে।
৫. জনসচেতনতা বৃদ্ধি
শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা জরুরি। স্কুল, কলেজ, এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শব্দদূষণ নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মশালা এবং সেমিনার আয়োজন করা যেতে পারে। মাইক এবং স্পিকার ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণের জন্য জনগণকে উৎসাহিত করা উচিত, বিশেষ করে ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে। ট্রাফিক পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনকে সড়কে হর্ন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে।
শব্দদূষণ ঢাকার পরিবেশ ও মানুষের জীবনে এক নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করছে। উন্নত জীবনযাপনের জন্য শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা অপরিহার্য। আইন, প্রযুক্তি এবং সচেতনতার সমন্বিত প্রয়াসই পারে একটি শব্দমুক্ত ঢাকা উপহার দিতে।